শ্রী মিশুক চন্দ্র ভুঁইয়া পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি। পটুয়াখালী জেলা বরিশাল বিভাগের জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বরিশালের মানুষের আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না তাই জনসভায় এসে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল বাস্তবায়নের জন্য বরিশালে এসেছি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশাল এক জনসভা। যোগ দিতে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ও উপজেলা থেকে হাজারো নেতাকর্মী যাত্রা করেছেন। শুক্রবার সকাল থেকে পটুয়াখালী জেলা ৮টি উপজেলা লঞ্চঘাটে জড়ো হয় বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের জনসভায় যাতায়াতের জন্য দিয়েছেন। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে পটুয়াখালী লঞ্চঘাট থেকে এবং বেলা ১২টায় দপদপিয়া লঞ্চঘাট থেকে জনসভার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় লঞ্চটি। কোন ভাড়া ছাড়াই এ লঞ্চে নেতাকর্মীরা বরিশালের জনসভায় গিয়েছেন। সেখান থেকে আবার পটুয়াখালী জেলা লঞ্চঘাটে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। ফলে আরামদায়ক ভ্রমণের মাধ্যমে জনসভায় যোগদিতে পেরে খুশি নেতাকর্মীরা। ইউপি চেয়ারম্যান , আমরা অসংখ্য নেতাকর্মীদের নিয়ে ইউনিয়ন থেকে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে এসেছি। এখানে আগে থেকেই অপেক্ষমান ৯ লঞ্চটি ছিল। এই লঞ্চে নেতাকর্মীরা বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যাবে। আমাদের নৌ পথে সহযেই জনসভায় যাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য লঞ্চের মালিক ধন্যবাদ জানাই। লঞ্চের মালিক জানান, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগদানের জন্য পটুয়াখালী জেলা গলাচিপা উপজেলা থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী যোগদান করবেন। তাদের আরামদায়ক যাত্রার জন্য লঞ্চ ফ্রি দেওয়া হয়েছে। লঞ্চে চড়ে জনসভায় যাবেন, আবার ওই লঞ্চেই তারা বাড়ি ফিরতে পারবেন।বরিশালের মানুষের আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বরিশালে এসেছি : প্রধানমন্ত্রী । বরিশালে জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি আমাদের স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করেছিল। ক্ষমতায় থেকে মানুষের ভাগ্য না গড়ে নিজেদের ভাগ্য গড়েছিল বিএনপি-জামায়াত। তারা মানুষের সম্পদ ধ্বংস করেছে। উন্নতি করেছে নিজের আর্থিক অবস্থা। জনগণের কথা তারা ভাবেনি। সেই দলই এখন বাসে-ট্রেনে আগুন দিয়ে ক্ষতি করছে দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ। হুমকির মুখে ফেলছে মানুষের জীবনমাল। শুক্রবার বিকেলে বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ’র আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরিশালবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আপনাদের জন্য সুখবর আছে, ভাঙ্গা থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা-পায়রা পোর্ট পর্যন্ত ৬ লেনের রাস্তা তৈরি করে দিব। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সাথে আলোচনা হয়েছে, সেখান থেকে আমরা অর্থ নিব। এই বরিশালের মানুষের আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না। আধুনিক রাস্তা তৈরি করে দিয়ে চলার পথ সহজ করে দিবো। আজ এই বরিশালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এসেছি। তিনি আরও বলেন, আমি এমন অবস্থায় দেশে ফিরেছিলাম যখন এই দেশে আমার বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। চারদিকেই পাকিস্তানের দোসররা ছিল। আমি দেখেছি কীভাবে ভোট চুরি করে, কীভাবে গণতন্ত্র হরণ করে। দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করেছি। তখন থেকেই মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করেছি। ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়। কিন্তু মনোনয়ন বাণিজ্য করে তারাই নির্বাচন শেষ করে দেয়। এরা মানুষের স্বার্থ চিন্তা করে না। তাদের উদ্দেশ্যই লুটপাট করা ও মানুষ পুড়িয়ে মারা চিন্তা। আজ বাংলাদেশে মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, সেটা বিএনপির আমলে ছিল না। দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে কমিয়ে আমরা ১৮ শতাংশে এনেছি। দেশের আট লাখ ৪১ হাজার গৃহহীন মানুষকে জমিসহ ঘর দিয়েছি। ২১টি জেলা গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছি। আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য কোনো মানুষ যাতে কষ্ট না পায়। আমরা সেই লক্ষ্যে নিয়েই কাজ করছি। তিনি আরও বলেন, দেশে খাদ্যের কষ্ট হবে না। আমরা খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছি। ৯ কোটি মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন করেছি, যা বিএনপির আমলে এমন কল্পনাও ছিল না। আমরা পোশাকশ্রমিকের মজুরি ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকায় করিয়েছি। মোবাইল ফোনের ব্যবহার সহজলভ্য হয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর। এখন গ্রামের মানুষও টাস্ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে মানুষ। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোনো কিছুতেই বরিশালকে ছাড়া হয় না সব দিকে উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছি। পায়রাবন্দর, তাপ বিদুৎ কেন্দ্র, রেললাইন,পদ্বাসেতুসহ ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়ক ফোর লেন হচ্ছে। ভাষণের শেষে বরিশালবাসির কাছে ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এসময় তিনি নৌকাকে বিজয়ী করতে জনসভায় উপস্থিত সকলকে হাত তুলে ওয়াদা করান। বিকেল ৩ টার দিকে জনসভার মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় বরিশালের আঞ্চলিক গান শুনিয়ে স্বাগত জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শিল্পীরা। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণঅচ্ঞলের রাজনৈতিক অভিবাক জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি লালকার্ড পেয়ে গেছে। বিএনপি আর নাই। খেলা হবে, খেলায় হবে। খেলায় আছে এক হাজার ৮৯৬ জন। সারাদেশে সিটি করপোরেশনের মেয়র।