29 C
Dhaka
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
একুশে ৭১লাইফইস্টাইলবৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ১৯০৫ সনে একমাত্র মুসলিম বিএ পাশ ইয়াসিন আলী

বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ১৯০৫ সনে একমাত্র মুসলিম বিএ পাশ ইয়াসিন আলী

তদানিন্তন বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল তথা জামালপুর মহাকুমার অর্ন্তগত পিংনা থানা(বর্তমান সরিষাবাড়ী থানা) ছিল শিল্প সংষ্কৃতি ব্যবসা বানিজ্য আইন আদালত ও নদী বিধৌত চারণ ভুমি। মাস্টার দা সুর্য্য সেন,প্রীতি লতা সেনসহ বৃটিশ বিরোধী কয়েকজন সুর্য্য সন্তানের পদধুলি এবং বৃটিশ রাজ্য বাু পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত একাধিক উর্দ্ধতন কর্তাব্যক্তির পদচারণা রয়েছে এ জনপদে। প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ,বাবু শশী মোহন চৌধুরী,বাবু আনন্দ রায় চৌধুরী,বাবু শৈলেস মুখ্যার্জি,বাবু রণ পাল,বাবু দেবেন্দ্র স্যালন,বাবু মাঞ্জনি বসু ছিলেন এ জনপদের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। হাজী মাজহারুল ইসলাম তালুকদার ছিলেন একমাত্র মুসলিম জমিদার। এখানে রসপাল মসজিদ ঘাটে বসে মহা কবি কায়কোবাদ রচনা করে ছিলেন বিখ্যাত আজান কবিতা। নানামুখি গুনে গুনান্বিত বহুল আলোচিত এ জনপদের আর এক শ্রদ্ধাভাজন পুরুষ মরহুম ইয়াসিন আলী আকন্দ। মরহুম ইয়াসিন আলী আকন্দ ছিলেন বিত্তবান অলি আহমদ এর সন্তান। তিনি ছিলেন পিতার অঢেল সম্পদ আর প্রচুর্য্যের মধ্যে বেড়ে উঠা কিংবদন্তি এক পুরুষ। জানা যায় মরহুম ইয়াসিন আলী আকন্দ ১৯০৫ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে যতজন পরিক্ষার্থী বিএ পরিক্ষায় বসেন তার মধ্যে তিনিই ছিলেন একমত্র মুসলিম ছাত্র। একমাত্র মুসলিম হিসেবে বিএ পাশ করার পর জ্বনাব ইয়াসিন আলী নজর কাড়েন বৃটিশ সরকারের। প্রাদেশিক সরকারের গভর্ণরের পিএস হিসেবে যোগদান করে কার্য দক্ষতা আর সততার মুল্যায়ন স্বরুপ তিনি সাব জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। সাব জজ পদে পদোন্নতি লাভের এক বছর দুই মাস নিষ্ঠার সাথে দ্বায়িত্ব পালন করে ছুটির আবেদন করেন। বৃটিশ সরকার তাঁকে ছুটি না দেয়ায় অভিমানি ইয়াসিন আলী আকন্দ চাকুরী থেকে ইস্তফা দিয়ে আইন পেশায় যোগদান করেন। তিনি আইনজ্ঞ হিসেবে এলাকায় খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি জনহিতকর কাজ করে দানবীর খেতাবও লোফে নেন। বর্তমান পিংনা বাজারের পূর্বপাশে এলাকার ধর্মপ্রান মুসলমানদের ইবাদাতগার মসজিদ ও গোরস্থানের জন্য এক’শ শতক(এক একর) জমি দান করেন। অত্র অঞ্চলে তিনি দানবীর হিসেবেই পরিচিত। পিংনা আকন্দ বাড়ী পৈতৃক ভিটায় চির নিদ্রায় শায়িত মরহুম ইয়াসিন আলী। ৫/৬ একর জায়গা জুড়ে বাড়ীর সীমানা।রয়েছে বিশালাকারের চারটি দিঘী।ফুল ফল আর ঔষধি গাছের সমাহার বাড়ীটির চারিধার। পাখির কিচির মিচির শব্দে মন জুড়ায়।এখনও স্বাক্ষ দের বাড়ীর মাঝ খানে অবস্থিত চুন সুরকি নির্মিত বিলাশ বহুল ভবন তিনি কতটা সৌখিন রুচিশীল আর জনপ্রিয় মানুষ ছিলেন।মরহুম ইসমাইল হোসেন ছিলেন ইয়াসিন আলীর একমাত্র পুত্র। জ্বনাব ইসমাইল হোসেন বিএ পাশ করার পর তৎকালিন মহকুমা সাপ্লাই অফিসার হিসেবে যোগদান করে কয়েক বছর চাকুরী করার পর ইস্তফা দিয়ে আইন পেশা বেছে নেন। আইন পেশায় কিছুদিন চাকুরী করে পরবর্তীতে হেমনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যেগদান করে কর্ম জীবনের যবনিকা টানেন।মরহুম ইসমাইল হোসেন ছিলেন সদালাপী ও সৌখিন ও সজ্জন ব্যক্তি। ইসমাইল হোসেন এর পুত্রদের মধ্যে জ্বনাব হেদায়েতুল ইসলাম চুন্নু (এমএসসি অনার্স )যিনি দীর্ঘদিন শিপিং কোম্পানীতে ম্যানেজার পদে চাকুরি করে অবসর গ্রহণ করেন।মোফাখ্খারুল ইসলাম নান্নু,এম,জুর রাঃবিঃ অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। মনোয়ার হোসেন পন্নু বিএ কানাডা প্রবাসি এবং নাজমুল ইসলাম নান্নু বিএসসি অনার্স মৃত্তিকা বিজ্ঞান ঢাঃবিঃ রাজনীতিবিদ। বর্তমানে জ্বনাব নাজমুল ইসলাম নান্নু সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি হিসেবে জনসেবায় দায়িত্বরত রয়েছেন।
মরহুম ইয়াসিন আলী আকন্দ এর উত্তর সূরী এবং স্থানীয় মুরুব্বীদের নিকট থেকে জানা যায়, তদান্তিন বৃটিশ আমলে তাঁর দানবীরতা,সহমর্মিতা,সহন শীলতা এবং পরোপকারিতা অবিস্মরনীয়। তা্ঁর পদাঙ্ক অনুস্মরণ করে আগামী দিনে মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা নিয়েই বেচেঁ থাকতে চান উত্তরসূরীগণ এমনটি প্রত্যাশা পরিবারের।

আরও পডুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

four − one =

- Advertisment -spot_img

সবচেয়ে পঠিত