বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চল আগামী ২২ মে থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে একটি ‘বিশেষ আম ট্রেন’ চালু করতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের দিকগুলো তুলে ধরে জোনের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, “আমরা এই আম উৎপাদনকারী এলাকা থেকে চাষি ও ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে ঢাকায় আম পরিবহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আম ব্যবসায়ী ও চাষিদের কল্যাণে কম খরচে আম পরিবহনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিকাল ৪.৩০ মিনিটে ছেড়ে যাবে এবং রাজশাহী স্টেশন থেকে বিকেল ৫.৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।
কার্গো ট্রেনটি প্রতিদিন পাঁচটি ওয়াগনে সর্বোচ্চ ১৫০ টন আম বহন করবে। সুতরাং, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামত পণ্য পরিবহন করতে পারেন। রাজশাহী থেকে ঢাকায় এক কেজি আম নিয়ে যেতে খরচ পড়বে ১ দশমিক ১৭ টাকা। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত ১.৩০ টাকা। অসীম তালুকদার স্পষ্ট করে বলেন যে বিশেষ ট্রেনে আম পরিবহনের জন্য প্রতি টন খরচ হবে ১১১৭ টাকা, যেখানে কুরিয়ার পরিষেবার দাম প্রতি টন ২০০০০ টাকা এবং প্রাইভেট ট্রাকের দাম প্রায় ২০০০ টাকা প্রতি টন।
রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রেলপথের ১৪টি স্টেশনে আম বোঝাই করার জন্য ট্রেনটি থামবে। পার্সেল বুকিং এবং আনলোডিং এর উপর ভিত্তি করে পার্সেল ট্রেনের অন্যান্য স্টেশনে স্টপেজ থাকতে পারে।
আম ছাড়াও বিশেষ ট্রেনে কম খরচে সব ধরনের শাকসবজি, মৌসুমি ফল, ডিমসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য বহনের ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানান তিনি। রেলওয়ের পোর্টাররা পণ্য লোড-আনলোডের সব ধরনের কাজ পরিচালনা করবে।
এই লক্ষ্যে, পোর্টারদের কীভাবে পণ্যগুলি বুকিং থেকে লোড করার পাশাপাশি সঠিকভাবে আনলোড করা যায় সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয়-ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ২০২০ সালে, চাষীদের পরিবহন সমস্যার প্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো আম স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়েছিল।
তালুকদার আরো বলেন, ৮৫৭ টন আম, লিচু ও অন্যান্য কৃষিপণ্য পরিবহন করে আমরা ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় করেছি। কর্মকর্তারা জানান, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ২৬,১৫০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে যেখানে এ বছর ২,৪৪,০০০ টন আমের ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নওগাঁ জেলায় ১২৬৭১ হেক্টর জমিতে আমের বাগানও লালন-পালন করা হয়েছিল যেখানে ১৬১২৪২ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং নাটোর জেলায় ৪৮২৩ হেক্টর জমিতে ৫৬০২১ টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।